বই নোট- ভাঙ্গা ও গড়া | ভাঙ্গা ও গড়া pdf


 ভাঙ্গা ও গড়া

সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী
অনুবাদ: সাইয়েদ মুহাম্মদ আলী

❏ ভূমিকা:
ভারত বিভাগের পূর্বাহ্নে পূর্ব-পাঞ্জাবে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয় তার তিন মাস পূর্বে ১৯৪৭ সালের ১০ মে পাঠান কোটের দারুল ইসলামে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় সাইয়েদ আবুল আলা মওদূদী (রহ.) প্রদত্ত বক্তৃতা।

❏ সমাজ ভাঙ্গে কেন?
১. আল্লাহকে ভয় না করা
২. আল্লাহর বিধান মেনে না চলা
৩. স্বার্থপরতা
৪. জড়তা অথবা বিপদগামিতা

প্রথম হচ্ছে- আল্লাহকে ভয় না করা। এটাই দুনিয়ায় সব রকমের অন্যায়, অবিচার, নিষ্ঠুরতা, বিশ্বাসঘাতকতা ও যাবতীয় দুর্নীতির মূল।
দ্বিতীয় হচ্ছে- আল্লাহর বিধান মেনে না চলা। এটিই মানুষের জন্যে কোন ব্যাপারেই অনুসরণযোগ্য স্থায়ী নৈতিক বিধান অবশিষ্ট রাখেনি। এরই বদৌলতে ব্যক্তি, দল ও জাতির সমস্ত কর্মধারা স্বার্থপূজা, ভোগ-বিলাস ও কামনা-লালসার দাসত্বের অধীন হয়ে গিয়েছে। এরই ফলে তারা নিজেদের উদ্দেশ্যের মধ্যে বৈধ্ ও অবৈধ্য পার্থক্য করে না।
তৃতীয় হচ্ছে- জড়তা অথবা বিপদগামিতা, এর দরুন আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি ও ক্ষমতা হয়তো কোন কাজে ব্যবহারই করে না, কিংবা তার অপব্যবহার করে অথবা আল্লাহ প্রদত্ত উপায়-উপাদানকে কাজেই লাগায় না কিংবা অকাজে লাগায়। প্রথম অবস্থায় আল্লাহ এহেন অপদার্থ ও অলস লোকদেরকে বেশি দিন দুনিয়ায় ক্ষমতাসীন থাকতে দেন না বরং তাদের বদলে কিছু না কিছু গঠনমূলক কাজ করে তাদেরকে ক্ষমতা দেন।

❏ সমাজ গড়ার উপাদান কী কী?
১. আল্লাহকে ভয় করা
২. আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন-যাপন করা
৩. মানবতার ব্যবস্থা
৪. সৎ কাজ

প্রথম হচ্ছে- আল্লাহকে ভয় করা, মানুষকে অসৎ পথ থেকে বিরত থাকার জন্য আল্লাহকে ভয় করাই হচ্ছে একমাত্র হাতিয়ার। এরূপ সুগঠিত চরিত্র শুধু সীমাবদ্ধ ভাবেই নয়, ব্যাপকভাবেই যাবতীয় কর্মকান্ডের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।
দ্বিতীয় হচ্ছে- আল্লাহর বিধান অনুযায়ী জীবন-যাপন করা, মানুষের প্রণয়ন করা নৈতিক ব্যবস্থা, কথা বলার সময় ব্যবহার করে। যেমন লেখক তার বইয়ে নীতির কথা লিখে, বাস্তব জীবনে স্বতন্ত্র নীতি অবলম্বন করে থাকে। অন্যের কাছে দাবী করার সময় এক নীতি, তার নিজের কাছে অন্যের দাবী পেশের নীতি অন্য রকম। তাই মানুষের ব্যক্তিগত, সমষ্টিগত, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক কাজ কারবারে নৈতিক চরিত্রের চিরন্তর নিয়ম-নীতি অনুযায়ী পরিচালনা করার জন্য আল্লাহর বিধানের অনুযায়ী জীবন-যাপন করা একমাত্র পথ।
তৃতীয় হচ্ছে- মানবতার ব্যবস্থা, এতে ব্যক্তিগত, জাতীয়, বংশীয় সাম্প্রদায়িক স্বার্থ
পরতার পরিবর্তে সমস্ত মানুষের সমান মর্যাদা ও সমান অধিকার থাকবে। এর ভেতর অযথা বৈষম্য, উচু-নীচু, অপবিত্রতার ধারণা, কৃত্রিম গোঁড়ামী ও পক্ষপাতিত্ব থাকবে না। এতে সবারই উন্নতি ও প্রগতির সুযোগ সুবিধা থাকবে। দুনিয়ার সব মানুষ সমানভাবে মিলে মিশে থাকতে পারে, এমন ব্যাপক হতে হবে এ ব্যবস্থা।
চতুর্থ হচ্ছে- সৎ কাজ, এর মানে হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত শক্তি ও উপায় উপাদানকে পূর্ণরূপে ও সঠিকভাবে কাজে লাগানো।




বিভাগ : বই নোট .

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url